এক শারদ বিকেলে শিশুদের সম্মিলন

:: বিনয় ভূষণ তালুকদার ::
করোনাময় সংকটকালে নাগরিক জীবনের কোলাহল ও বন্দী জীবন থেকে শিশুদেরকে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেঠোসুরের পক্ষ থেকে বিগত ৩রা অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর জিন্দাবাজারস্থ মিউজিয়াম অব রাজাসে আমরা বসি। নতুন প্রজন্মকে ষড়ঋতুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এই ক্রান্তিকালে মেঠোসুরের সম্পাদক ব্রতচারী বিমান তালুকদার ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাষ্টমস কর্মকর্তা অঞ্জন সরকারের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রথম পর্বে শরতের হিমেল আকাশ ও কাশফুলকে আবাহন জানাতে আমরা গত ৯ অক্টোবর সিলেটের শহরতলী মীরাপাড়া সংলগ্ন বিলজুড়ে ঘুরে বেড়াই।
ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের ছুটাছুটিতে মুখরিত হয়ে উঠে এক প্রাণবন্ত বিকেল।
মেঠোসুরের এই আনন্দ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক পর্ষদের আহবায়ক শিক্ষক পরেশ চন্দ্র দাশ। অন্যতম সংগঠক ব্যাংকার বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বাবলু’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেঠোসুরের কর্ণধার ব্রতচারী ও কবি বিমান তালুকদার।
শারদ শুভেচ্ছায় প্রকৃতি ও শিশুদের নিবেদন করে আলোচনায় মুগ্ধতা ছড়ান সংগীত শিল্পী মুস্তাফিজুর রহমান মুরাদ, লেখক বিনয় ভূষণ তালুকদার, সাংবাদিক বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, ফটো সাংবাদিক আনিস রহমান, মেঠোসুরের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাষ্টমস কর্মকর্তা অঞ্জন সরকার, চিত্রশিল্পী সত্যজিৎ চক্রবর্তী, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সুমিত্রা সুমী, সংগীত শিল্পী কাষ্টমস কর্মকর্তা মল্লিকা দেবী, বাংলাদেশ পুলিশের এস.আই. বিরাজ তালুকদার, এ.এস.আই. প্রবীর ভট্টাচার্য্য, রোটারিয়ান গৌরাঙ্গ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেটের সহকারী পরিচালক নিরূপম তপু, কবি মেঘদাদ মেঘ প্রমুখ।
একতারা, মন্দিরা, ডপকির তালেতালে নেচে গেয়ে, কখনো ফুটবল খেলে, কখনো লজেন্স আর জুস খেয়ে দারুণ সময় অতিবাহিত করেছে আমাদের প্রিয় শিশুরা।
পড়ন্ত বিকেলে কাশফুলের শুভ্রতায় “গ্রীষ্ম বর্ষ শরৎ হেমন্ত শীত বসন্ত” শিশুতোষ সংগীতের মধ্য দিয়ে ২য় পর্বে রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সুমিত্রা সুমি, সংগীত শিল্পী মল্লিকা দেবী, সংগীত শিল্পী মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও সংগীত শিল্পী দিপালী তালুকদারের পরিচালনায় শিশুদেরকে আনন্দে মাতিয়ে রাখেন। সমবেত কণ্ঠে গীত হয়-
“আবার এলো যে সন্ধ্যা, শুধু দু’জনে…..।”
“প্রজাপতি প্রজাপতি, কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিনও পাখা……।”
“লোকে বলে, বলে রে, ঘরবাড়ি ভালানা আমার …….।”
“আমরা সবাই রাজা, আমাদেরই রাজার রাজত্বে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলবে কি সতে।”
যে সকল শিশু কিশোরদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে সেদিনের সেই সুস্মিত বিকেল প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিলো তারা হচ্ছে- সাংবাদিক বাপ্পা ঘোষ চৌধুরীর দু’মেয়ে গুনগুন ও গুঞ্জন, ব্যাংকার রূপক দাশের ছেলে আদি দাশ, সংগীত শিল্পী মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদের মেয়ে আরশি ও ছেলে আরিব, কাষ্টমস কর্মকর্তা অঞ্জন সরকারের মেয়ে মৌন ও ছেলে মুক্ত, কবি বিমান তালুকদারের দু’ছেলে আনন্দ ও উল্লাস, এস.আই. বিরাজ তালুকদারের দু’মেয়ে রাজশ্রী ও বনশ্রী, এ.এস.আই প্রবীর ভট্টাচার্য্যরে মেয়ে পৌলমী, ব্যবসায়ী দীপু রায়ের মেয়ে মৃত্তিকা রায় মাধুর্য্য, রোটারিয়ান গৌরাঙ্গ তালুকদারে মেয়ে অণুসূয়া তালুকদার, ছেলে গৌরব তালুকদার, ভাতিজা এপিক তালুকদার কাব্য, ব্যবসায়ী অলক বিশ্বাসের ছেলে অভিদ বিশ্বাস, মেয়ে অদ্বিতীয়া বিশ্বাস অর্ণি, ফটো সাংবাদিক আনিস রহমানের দু’ছেলে তাসিন রহমান ও তাহমিদ রহমান এবং আমার দু’ছেলে বিপ্রজিত তালুকদার দীপ ও বৃন্ত তালুকদার দীপ্ত।
ছোট ছোট কিন্তু দুর্দান্ত বুদ্ধিদীপ্ত এবং দুষ্টু সেই সব শিশুদের সহজাত প্রবৃত্তিতে এক অসাধারণ বিকেল কাটালাম আমরা। আমাদের এইসব প্রাণময় শিশুদের মায়েরাও অনেক কষ্ট শিকার করে এই আয়োজনে উপস্থিত থেকে আমাদেরকে প্রাণিত করেছেন। তাদের সকলের তরে আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
জাতীয় কবির গানে গানে বলতে ইচ্ছে করে- “খেলিছ এ বিশ^লয়ে বিরাট শিশুর আনমনে ….।”
আমাদের সকল শিশুরা ভালো থাকুক আর সত্যিকারের মানুষ হয়ে গড়ে উঠুক। কেননা “শিশুর পিতা ঘুমিয়ে আছে, সব শিশুরই অন্তরে।”
আবারো আমরা সম্মিলিত হবো ৬টি ঋতুচক্রে অন্য কোন মনোরম স্থানে। আপনিও সন্তান সহ আমাদের সঙ্গী হবেন, এই শুভ প্রত্যাশা আমার।
লেখক- বিনয় ভূষণ তালুকদার, ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক-কলামিস্ট, সিলেট। মোবাইল ঃ ০১৭১৮ ৭৬১৩১৪।
Related News

জুমআর দিন যে আমল গুরুত্বপূর্ণ
:: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী :: হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুRead More

রিমার উপন্যাস ‘ডেসপারেট মারিয়া’ নিয়ে সিলেটে সাহিত্য আড্ডা
কবি ও লেখক মারিয়া রিমার উপন্যাস ‘ডেসপারেট মারিয়া’ নিয়ে আলোচনা সভা, কবি-সাহিত্যিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়Read More